পুণ্যময় মৃত্যুর কিছু নিদর্শন

  প্রকাশিত হয়েছেঃ  09:24 PM, 14 December 2018

জীবনের শুভ ও পুণ্যময় সমাপ্তি প্রত্যেকেই প্রত্যাশা করে। আর একজন মুমিনের পরম প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা হলো ঈমান ও আমলের সঙ্গে মৃত্যু লাভ করা।

মৃত্যুর আগেই যাবতীয় পাপ থেকে তাওবা করে নিজেকে শুধরে নেওয়া কোনো মুমিনের শেষ পরিণতির নিদর্শন। ভালো কাজ ও আল্লাহর আনুগত্যের প্রতি ক্রমেই ধাবিত হওয়াও একটি নিদর্শন।

মুমিন মৃত্যুর আগে জান্নাতের সুসংবাদ পেতে থাকে। ফলে তার চেহারায় আনন্দের দীপ্তি প্রকাশ পায়।

আল্লাহ বলেন, “যারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ’, অতঃপর (ইমানের ওপর) অবিচলিত থাকে (মৃত্যুর সময়), তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়ে বলতে থাকে, ‘তোমরা ভীত হয়ো না, চিন্তিত হয়ো না। এবং তোমাদের যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তার জন্য আনন্দিত হও। (সুরা হা-মিম সিজদা, আয়াত, ৩০)

বিখ্যাত হাদিসবিশারদ শায়খ নাসের উদ্দিন আলবানি (রহ.) তার ‘আহকামুল জানায়েজ’ নামক কিতাবে কোরআন ও হাদিসের আলোকে মানুষের শুভ পরিণাম ও পুণ্যময় মৃত্যুর ১৯ আলামত উল্লেখ করেছেন। প্রতিটির সঙ্গেই তিনি কোরআন বা হাদিসের উদ্ধৃতি উপস্থাপন করেছেন। উদ্ধৃতি ছাড়া সংক্ষেপে এখানে তা তুলে ধরা হলো—

এক. কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করে মৃত্যুবরণ করা।

দুই. মৃত্যুর পর কপাল থেকে ঘাম বের হওয়া।

তিন. পবিত্র জুমার রাত বা দিনে মৃত্যুবরণ করা।

চার. যুদ্ধের ময়দানে শাহাদাত বরণ করা।

পাঁচ. আল্লাহর পথে গাজি হয়ে মৃত্যুবরণ করা।

ছয়. কোনো মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা।

সাত. পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণ করা।

আট. পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করা।

নয়. কোনো কিছু পতিত হওয়ায় মৃত্যুবরণ করা।

দশ. সন্তান প্রসব করার সময় কোনো নারী মৃত্যুবরণ করা।

এগারো. আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণ করা।

বারো. ফুসফুস (প্লুরিসি) রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা।

তেরো. যক্ষ্মা ও ক্ষয়কাশে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা।

চৌদ্দ. ছিনতাইকারী ও লুণ্ঠনকারীর হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে নিহত হওয়া।

পনেরো. ধর্মের ব্যাপারে যেকোনো প্রতিরোধের মুখে পতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করা।

ষোলো. আত্মরক্ষার জন্য প্রতিরোধ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা।

সতেরো. আল্লাহর পথে যুদ্ধের জন্য সারিবদ্ধ হওয়া অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা।

আঠারো. কোনো নেক কাজ করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা।

উনিশ. অত্যাচারী শাসক অন্যায়ভাবে যাকে হত্যা করেছে।

এ ছাড়া হজের ইহরাম বাঁধা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা। শেষ কাজ ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত হওয়া ইত্যাদি সুন্দর মৃত্যুর নিদর্শন।

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে এবং এটাই হবে তার শেষ আমল, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় একদিন রোজা রাখবে এবং এটাই হবে তার শেষ আমল, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। যে আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় সদকা করবে এবং এটাই হবে তার শেষ আমল, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসনাদে আহমদ, ৫/৩৯১)

এ জন্য চেষ্টা করা চাই, যেন দিন ও রাতের শেষ ও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত হয়।

প্রিয় পাঠক, আপনিও হতে পারেন আওয়ার বাংলা অনলাইনের একজন অনলাইন প্রতিনিধি। ইসলাম বিভাগে যেকোন তথ্য, প্রতিবেদন, গবেষণা, মাসালা এবং অলোচনা নিয়ে লিখুন আমাদের কাছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুনঃ [email protected] এই ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন :