জিরার গুনাগুন জেনে নিন

  প্রকাশিত হয়েছেঃ  06:36 AM, 14 December 2018

অনেকসময় বেশি খেলে কিংবা হজমে সহায়ক নয় এমন খাবার খেলে বদহজম হয়। কখনও আবার এটি কোনা রোগের উপসর্গ হিসেবে প্রকাশ পায়। বদহজম হলে সাধারণত পেট ফাঁপে, ব্যথা করে কিংবা গ্যাস হয়। তখন বমি কিংবা বমি বমি ভাবও দেখা দেয়। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় বদহজম দুর করার সহজ একটি পদ্ধতি রয়েছে।

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বলছে, জিরা দিয়ে তৈরি এক গ্লাস পানি খেলেই হজমের সমস্যা অনেকটা কমে যাবে। কারণ জিরায় থাকা থাইমল শরীরের পাচনের এনজাইমগুলো জাগিয়ে তোলে।

জিরাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। এ কারণে এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতা বাড়ায়। বমি বমি ভাব কিংবা কোষ্টকাঠিন্য দূর করতেও জিরার জুড়ি নেই।

জিরা পানি তৈরির পদ্ধতিও বেশ সহজ। এক কাপ পানিতে জিরার কয়েকটি দানা দিয়ে ভালভাবে ফুটিয়ে নিন। এরপর এটি ঠাণ্ডা করে সকালে খালি পেটে খান। এই পানীয়টি বদহজম দূর করতে যেমন কার্যকরী তেমনি ওজন কমাতেও এটি ভূমিকা রাখে।

রান্নায় জিরার ব্যবহার নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। শুধুই যে রান্নায় সুগন্ধের জন্য জিরা ব্যবহার হয়, তা কিন্তু নয়। স্বাস্থ্যের কথা ভেবেও আমরা রান্নায় জিরা দিই। স্পাইসি এই মশালা যে আপনার শরীর থেকে বাড়তি মেদ ঝরাবে, সে খোঁজ কি রাখেন? হাতের কাছে ক্যালেন্ডার নিয়ে শুধু কয়েকদিন গোল্লা পাকান। আর দেখুন কী হয়।

ধৈর্য ধরে ১৫টি দিন দেখুন। এর মধ্যে রোজ নিয়ম করে এক চামচ গোটা জিরা খেয়ে ফেলুন। একদিনও বাদ দেবেন না। তার আগে আর একটি কাজ আপনাকে করতে হবে। নিজের ওজন নিয়ে, লিখে রাখুন। ১৫দিন পর ফের ওজন নিন। নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। কলা দিয়ে জিরা খেলেও ওজন ঝরবে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গোটা জিরা খুব দ্রুত শরীর থেকে ওজন ঝরাতে সক্ষম।

শুধু যে চর্বি বের করে দেয়, তা কিন্তু নয়। একই সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলকে শরীর থেকে বের করে দেয়। ফলে, যারা ওজন কমানোর জন্য জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাচ্ছেন, একবার ১৫ দিনের জন্য জিরার ওপর ভরসা রাখতে পারেন। নিরাশ হবেন না। গবেষকরা বলছেন, জিরার মধ্যে রয়েছে থাইমল ও অন্যান্য কিছু তেলের উপস্থিতি। যার কাজ হলো লালা নিঃসরণকারী গ্রন্থিকে উত্তেজিত করা। যার ফলে খাবার ভালো হজম হয়।

এ ছাড়াও জিরার গুণে পরিপাকতন্ত্র ভালো কাজ করে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, হজমের গণ্ডগোল হলে, জিরা দিয়ে চা খেয়ে দেখতে পারেন। উপকার পাবেন। এক গেলাস পানিতে এক চামচ জিরা দিন। ভালো করে ফুটিয়ে নিন। পানির রং লালচে হয়ে এলে, গ্যাস বন্ধ করে, পাত্রটি চাপা দিয়ে রাখুন। একদম ঠাণ্ডা হওয়া অবধি অপেক্ষা করুন। এই জিরা চা দিনে তিন বার খেলে, হজমশক্তি বাড়বে। পেটে ব্যথা কমবে।

কী ভাবে জিরা খাবেন?

এক. একটা গেলাসে বড় চামচের দু-চামচ গোটা জিরা সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই পানি গরম করে, জিরা না ছেঁকে চায়ের মতো খান। মুখে গোট জিরা পড়লে, ফেলবেন না। চায়ের মতো কয়েক দিন পান করুন, দেখবেন ওজন কমছে।

দুই. যদি দেখেন, উপরের দাওয়াই আপনার ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করছে না, তা হলে দ্বিতীয় উপায়ের আশ্রয় নিন। খাবারে জিরার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। দইয়ের সঙ্গেও জিরা খেতে পারেন। ৫ গ্রাম দুইতে এক চামচ জিরা গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়মিত খান। ওজন নিশ্চিত ভাবেই কমবে।

তিন. কয়েক চামচ মধু ও তিন গ্রাম জিরা গুঁড়ো এক গেলাস পানিতে ভালো করে মিশিয়ে নিন। নিয়মিত এই মিশ্রণটি খান। স্যুপ তৈরি করে, এক চামচ জিরাগুঁড়ো মিশিয়ে খেলেও ভালো কাজ দেবে।

চার. পাতিলেবু ও রসুন ওজন ঝরাতে খুব ভালো দাওয়াই। গাজর ও অন্যান্য সবজি সেদ্ধ করে নিয়ে, রসুন কুচি ও লেবুর রস ঢেলে দিন। তাতে কিছুটা জিরার গুঁড়ো মেশান। রোজ রাতে খেয়ে, ম্যাজিক পরিবর্তন দেখুন। ১৫ দিনে পরেই বুঝতে পারবেন আপনার ওজন কমেছে।

আপনার মতামত লিখুন :