কোন মন্ত্রণালয়ে কে হলেন মন্ত্রী

  প্রকাশিত হয়েছেঃ  08:19 AM, 07 January 2019

একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর টানা তৃতীয়বারের মতো মন্ত্রিসভা গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। সোমবার (০৭ জানুয়ারি) শপথ উপলক্ষে রোববার (০৬ জানুয়ারি) বিকেলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এরই মধ্যে তাদের দফতরও বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে।

রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

এবারের মন্ত্রিসভায় পুরনো অনেক মন্ত্রী বাদ পড়েছেন। আবার নতুন অনেকেই স্থান পেয়েছেন টানা তৃতীয়বারের শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভায়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ছাড়াও জনপ্রশাসন, প্রতিরক্ষা, বিদ্যুৎ , জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের দায়িত্ব রয়েছে শেখ হাসিনার হাতে

সোমবার বঙ্গভবনে মন্ত্রিসভায় শপথের জন্য অর্থমন্ত্রী হিসেবে ডাক পেয়েছেন আ হ ম মোস্তফা কামাল। বাদ পড়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আর ওবায়দুল কাদেরকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রণালয়ে রাখা হয়েছে।

আর ডা. দীপু মণি শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে ডাক পাওয়ায় বাদ পড়েছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। এই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হয়েছেন মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

আর আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যথারীতি রয়েছেন আনিসুল হক; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও বহাল আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

আর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন বীর বাহাদুর উ শৈ সিং। আর পদোন্নতি পেয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন এম এ মান্নান

এএইচ মাহমুদ আলীর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আগের মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রীর ভাই ড. এ কে আবদুল মোমেন। তবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন শাহরিয়ার আলম-ই।

নসরুল হামিদ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ও জুনাইদ আহমেদ পলকও রয়েছেন আগের দায়িত্বে (আইসিটি প্রতিমন্ত্রী)। আগের মন্ত্রিসভার ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের ডিলুর জায়গায় পদোন্নতি পেয়েছেন প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জাহিদ আহসান রাসেল; এই দায়িত্বে আগে ছিলেন ড. বীরেণ শিকদার।বাদ পড়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। আর ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন ডা. এনামুর রহমান, এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

আগের মন্ত্রিসভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের স্থলে দায়িত্ব পেয়েছেন শ ম রেজাউল করিম। আর বাণিজ্যমন্ত্রী হয়েছেন টিপু মুনশি; এই মন্ত্রণালয়ে আগে ছিলেন তোফায়েল আহমেদ।

তবে রদবদল হয়নি আ ক ম মোজাম্মেল হকেরও, তিনি যথারীতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

ইমরান আহমেদ চৌধুরী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন; এখানে টেকনোক্র্যাট শাখায় আগে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন নূরুল ইসলাম বিএসসি।

আগের মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট শাখায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মোস্তাফা জব্বার ছাড়াও স্বপদে পদে বহাল রয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান

আর রেলমন্ত্রী মজিবুল হকের জায়গায় এসেছেন মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম সুজনবন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন; বেগম হাবিবুন্নাহারকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের জায়গায় নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন তাজুল ইসলাম; প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন স্বপন ভট্টাচার্য।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে সরিয়ে প্রতিমন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদকে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; আর প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে শরীফ আহমেদকে। গোলাম দস্তগীর গাজীকে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; ফলে বাদ পড়েছেন মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মোহাম্মদ নাসিমের জায়গায় পদোন্নতি পেয়েছেন প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক; তার জায়গায় এসেছেন মো. মুরাদ হাসান। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত পেয়েছেন সাধন চন্দ্র মজুমদার।

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ড. আব্দুর রাজ্জাক। আর হাসানুল ইনুকে সরিয়ে ড. হাছান মাহমুদকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে
শাজাহান খানকে সরিয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে। আর জাহিদ ফারুককে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও একেএম এনামুল হক শামীমকে উপমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী ছিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।

আর নুরুল মজিদ হুমায়ুন শিল্পমন্ত্রী হয়েছেন, এই মন্ত্রণালয় ছিলো আমির হোসেন আমুর দায়িত্বে। আর প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে কামাল আহমেদ মজুমদারকে। আর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে আশরাফ আলী খান খসরুকে; বিদায়ী মন্ত্রিসভায় এ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী ছিলেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

আর মুজিবুল হক চুন্নুর স্থলে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন মন্নুজান সুফিয়াপ্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হয়েছের জাকির হোসেন, এই মন্ত্রণালয়ে আগে পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।

এদিকে ইসমত আরা সাদেকের পরিবর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে ফরহাদ হোসেনকে, এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে কেএম খালিদকে, এ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন আসুদুজ্জামান নূর।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন মো. মাহবুব আলী। এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন একেএম শাহজাহান কামাল।

আর ধর্ম প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে। টেকনোক্র্যাট শাখায় এই মন্ত্রণালয়ে ছিলেন অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

তাদের সবাইকে সোমবার বিকেলে শপথের জন্য গণভবনে উপস্থিত থাকতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে।

এদিকে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের তোড়জোড়ের মধ্যে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের জন্য গাড়ি প্রস্তুত করে রেখেছে সরকারি যানবাহন অধিদফতর।

পরিবহন কমিশনার সৈয়দ আবদুল মমিন জানান, মন্ত্রিসভার নির্দেশনায় তারা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।

গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সংসদ সদস্যরা শপথ নেন গত ৩ জানুয়ারি। এরই মধ্যে বিরোধী দলে থাকার ঘোষণা দিয়েছে এরশাদের জাতীয় পার্টি।

প্রিয় পাঠক, আপনিও হতে পারেন আওয়ার বাংলা অনলাইনের একজন সক্রিয় অনলাইন প্রতিনিধি। আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা, অপরাধ, সংবাদ নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুনঃ [email protected] এই ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন :